TAJBAJ Bangla Blog: 2022

Thursday, October 6, 2022

কবিতা শিশুর দুই জীবন children day poem

 কবিতা - শিশুর দুই জীবন

কবি - করিমুল ইসলাম




আমি শিশু

                   আমার মন অলিখিত সাদা কাগজের মতো, 

আমি বাবা - মায়ের

                  কাছের সবচেয়ে  শ্রেষ্ঠ প্রিয়। 

আমি পবিত্র প্রাঞ্জল 

                    প্রচুর আনন্দের উৎস, 

আমি ভালোবাসি

                    মাতৃকোল এবং পিতৃ স্নেহ। 

আমি ভোরের

                  শিশির ভেজা একটি সুন্দর গোলাপ, 

আমার সাথে

                  কতজনই করতে চায় আলাপ। 

আমি সুভাষ ছড়াই

                           মনে প্রাণে, 

আমি হেসে ওঠি 

                           কারণে অকারণে। 

আমি সবুজ বাগানের 

                          ছোট্ট একটি পুষ্পকড়ি , 

আমি পরিবারের 

                     বাবা মায়ের সাজিয়ে রাখা ফুলের ঝুড়ি। 

আমি ছোট্ট দুটো রুপোর দাঁত বের করে 

                        আধো আধো করে বলি কথা, 

 আমার মনে প্রাণে

                        লুকিয়ে রয়েছে কত ব্যথা। 

আমার খুব কষ্ট হয় 

                       কারণ আমার বন্ধু ভালো নেই, 

সেও বেড়ে উঠতে চেয়েছিল

         তাকে মেরে ফেলেছো পরিস্ফুটিত হওয়ার আগেই। 

সেও আমার মতো 

                      চেয়েছিল স্বাধীনভাবে বাঁচতে, 

তোমরা তাকে

                     বিক্রি করেছ পাষণ্ড চিত্তে। 

সেও আমার মতো

                       চেয়েছিল সুস্থ সবল হতে, 

তোমরা তাকে 

                     দাওনি পুষ্টিকর খাদ্য খেতে। 

সেও আমার মতো

                     চেয়েছিল পাঠশালা যেতে, 

 তোমরা তাকে

                      বন্দী করেছ হোটেলে। 

সেও আমার মতো

                       চেয়েছিল পাহাড়ে সমুদ্রে ঘুরতে,

তোমরা তাকে

                  পাঠিয়েছ পাশের বাড়ির বাসন মাজতে। 

তোমরা তার 

                  হারিয়ে ফেলেছ পবিত্র সত্তাকে, 

সে তোমাদের

                   ক্ষমা করবে না ভবিষ্যতে। 

শিশু হল সমাজের 

                     জাতির দেশের সেরা উপহার, 

 শিশুকে সুশিক্ষা

                     নিরাপত্তা দেওয়া দরকার পিতা-মাতার। 






Sunday, October 2, 2022

গান্ধী জয়ন্তী বক্তৃতা

 

গান্ধী জয়ন্তী বক্তৃতা

 লেখক - করিমুল ইসলাম

উপস্থিত সম্মানিত অধ্যক্ষ শিক্ষক এবং প্রিয় সহপাঠী ও শ্রোতামন্ডলী আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আজ ২ রা অক্টোবর আমরা সকলে গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছি।


মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ২ রা অক্টোবর ১৮৬৯ সালে গুজরাটে পর্বন্দরে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা করমচাঁদ উত্তমচাঁদ গান্ধী এবং মাতা পুতলিবাই গান্ধী। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতে এবং বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা অর্থাৎ মহান আত্মা এবং বাপু অর্থাৎ বাবা নামে পরিচিত ছিলেন। ভারত সরকার সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ২ রা অক্টোবর তার জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদার সহিত পালিত হয়। ২০০৭ সালে ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ রা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

 

তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিত ব্রিটিশ আইনজীবী। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গান্ধী প্রথম তার অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন। ভারতে ফিরে আসার পরে তিনি কয়েকজন কৃষক ও দিন মজুরকে সাথে নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বলেন --

 “ শক্তি দেহের ক্ষমতা থেকে আসে না ; শক্তি আসে অদম্য ইচ্ছা থেকে ”

১৯২০ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গান্ধী একাধিক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে সত্যাগ্রহ আন্দোলন বলা হয়। ভারত জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে আসার পর গান্ধী সমগ্র ভারতব্যাপী দরিদ্র দূরীকরণ, নারী স্বাধীনতা, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, বর্ণ বৈষম্য দূরীকরণ প্রচার শুরু করেন। কিন্তু এর সবগুলোই ছিল স্বরাজ অর্থাৎ ভারতকে বিদেশি শাসন থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য। বিহারের চম্পারণে চাষীদের উচ্চ মাত্রায় কর দিতে বাধ্য করা হতো এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিশেষ করে নীল চাষ এবং তুলা চাষ করতে বাধ্য করা হতো। 

১৯১৭ সালে গান্ধী ইংরেজদের এই পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন। মহাত্মা গান্ধীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি ছিল অসহযোগ আন্দোলন । তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গেলে তাকে কারাগারে বন্দী করা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন ---

 “তোমরা আমাকে শেকল দিয়ে বাধতে পারো, তোমরা আমাকে অত্যাচার করতে পারো, এমনকি তোমরা আমার এই শরীরটাকে ছিন্নভিন্ন করতে পারো কিন্তু তোমরা কখনোই আমার মস্তিষ্ক বন্দি করতে পারবে না।”


তিনি সাধারণ জীবন যাপন করতেন । তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধুতি এবং সাল যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে আপনি কেন এইরকম সাধারণ পোশাক পরিধান করেন তিনি বলেন ---

যেখানে আমার দেশের জনসাধারণের পোশাক নেই সেখানে আমি কি করে দামি পোশাক পরিধান করব। 

গান্ধী জানতেন ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে হিন্দু মুসলিম একতা কতটা প্রয়োজন তাই তিনি খিলাফত আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন। খিলাফত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধী মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থন করলেও অনেক হিন্দুত্ববাদী নেতা তাতে সন্তুষ্ট হননি। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখা ।

১৯৪২ সালে গান্ধী শুরু করেন ভারত ছাড়ো আন্দোলন । ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার দাবি জানান মহাত্মা গান্ধী।তার Do Or die  কারেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে, ধ্বনিতে মুখরিত হলো ভারতের আকাশ বাতাস। 

১৯৪৮ সালের ৩০ শে জানুয়ারি গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করা হয় । সে সময় তিনি নতুন দিল্লির বিরলা ভবনে মাঝরাত্রি কালীন পথসভা করছিলেন । তার হত্যাকারী ছিলেন নাথুরাম গডসে। 

তিনি বিশ্বাস করতেন ---

  “কোন কিছুতে বিশ্বাস করে সেই মোতাবেক জীবন যাপন না করাটা অসততা ”

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু গান্ধীজি জানতেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করাটা বেশি কঠিন আর তাই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির উপর। 

আসুন আজ এই বিশেষ দিনে আমরা সকলে শপথ গ্রহণ করি, সকলে এক হয়ে আরো সুন্দর ও সুস্থ ভারত গড়ে তুলি।




Wednesday, September 28, 2022

PM Kisan Beneficiary Status


PM Kisan Beneficiary Status

এই প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক সংগঠিত। এই প্রকল্পটি ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শুরু করেছিলেন। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র কৃষকদের সুবিধা প্রদান করা। মূলত এই প্রকল্পের সুবিধা শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা  পাবেন। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী কৃষাণ সম্মান নিধি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছরে ২০০০ টাকা ৩ কিস্তিতে মোট ৬০০০ টাকা কৃষকদের সরাসরি Bank Account এ দেওয়া হয়। এই টাকা দিয়ে কৃষকরা ফসল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সার, বীজ ইত্যাদি কিনতে পারবেন। 


প্রধানমন্ত্রী কিষাণ স্ট্যাটাস চেক Mobile Number অথবা Registration number :-

আসুন আমরা আপনাকে জানাই যে, মোবাইল নম্বর অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দ্বারা PM কিষাণ স্ট্যাটাস চেক করার জন্য, আপনাকে কিছু ধাপে ধাপে অনলাইন প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে, যার সম্পূর্ণ ধাপে ধাপে তথ্য আমরা এই নিবন্ধে আপনাকে সরবরাহ করব, যাতে আপনি সবাই সহজেই আপনার নিজের সুবিধাভোগী অবস্থা পরীক্ষা করুন। এটি পরীক্ষা করে দেখুন এবং এটির সুবিধা নিন।

শুধুমাত্র আপনার মোবাইল নম্বর অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে PM কিষাণ যোজনার অধীনে যেকোন কিস্তির সুবিধাভোগী স্থিতি পরীক্ষা করতে, আপনাকে এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে, যা নিম্নরূপ -

মোবাইল নম্বর অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দ্বারা PM কিষাণ স্ট্যাটাস চেক করতে, প্রথমে আপনাকে এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের হোম পেজে আসতে হবে, যা এইরকম হবে –website link :- pmkisan.gov.in  



হোম পেজে আসার পরে, আপনি প্রাক্তন কর্নারের অংশটি পাবেন, যেখানে আপনি Beneficiary Status বিকল্পটি পাবেন, সেখানে আপনাকে ক্লিক করতে হবে,
ক্লিক করার পর এর স্ট্যাটাস পেজ আপনার সামনে খুলে যাবে ।
যেখানে আপনি এরকম কিছু অপশন পাবেন




এরপর আপনাকে  Three dots click করে Translate... অপশনে ক্লিক করে বাংলা ভাষার করতে হবে। 
 এখানে আপনাকে মোবাইল নম্বরের অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর অপশনে ক্লিক করতে হবে,
এর পরে আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বর অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে হবে । তারপর Image text লিখতে হবে এবং সাবমিট অপশনে ক্লিক করতে হবে । তারপর আপনাকে আপনার Beneficiary Status দেখানো হবে যা এরকম হবে –




অবশেষে, এইভাবে, উপরের সমস্ত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার অর্থপ্রদানের স্থিতি পরীক্ষা করতে পারেন এবং এর সুবিধাগুলি পেতে পারেন।
উপরের সমস্ত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করার পরে, আপনি সকলেই সহজেই আপনার সুবিধাভোগীর অবস্থা পরীক্ষা করতে এবং এর সুবিধাগুলি পেতে পারেন।



পরিশেষে, আমরা আশা করি আপনারা সকল কৃষক ভাই ও বোনেরা অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটিতে লাইক, শেয়ার এবং কমেন্ট করবেন।

বিস্তারিত জানতে চাইলে এই লিঙ্কে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখতে পারেন ।👇








 


Thursday, September 22, 2022

How to Earn Money Online for Students?


How to Earn Money Online for Students?

Without Investment for Students :- Blogger site is an easy way for students to earn money online without investment. Many of us want to earn more with less effort. It is possible to earn online. Online income is an income that can be earned very easily. One such online income is blogger. It is possible to earn lifetime by writing one post on blogger. Blogger income is passive income which you can earn while sleeping. Passive income is more beneficial than active income.


Source of online income :- Online income can be done in different ways, but some important means of online income are Youtube, Blogger, Facebook page, Quora, affiliate marketing, online business.

     According to me the most money can be earned through blogger. Blogger is the best site. 

How to get money? :- Even if you earn money through YouTube or Blogger, there is a medium which is Adsense Account. Once the Adsense account is approved, money can be withdrawn directly to the bank account through Adsense.


Rules of Adsense Account Approval :- To get Adsense Account Approved, you have to write 15 to 20 posts on blogger and each post should have 1000 to 1500 words. Posts should be Unique, at least 80% or 100% Unique is very good. There should be 1500 to 2000 Traffic or Visitors.


How can payments be received? :- After getting Adsense Account Approved, 6 Digit PIN will be sent to your address from Google Adsense Team if you earn 10💲 dollars. After generating that 6 Digit PIN, if the income is 100💲 dollars, the payments will be directly converted into rupees in the bank account.


       " If you work, you will get results"



Wednesday, September 21, 2022

অনলাইন ইনকামের উপায় (Online income)

 

অনলাইন ইনকামের উপায় (Online income) 



অনলাইন ইনকাম হলো এমন একটি ইনকাম যা খুব সহজেই ইনকাম করা যায়। এমনই একটি অনলাইন ইনকাম হল ব্লগ। ব্লগারে একবার পোস্ট লিখে সারা জীবন আয় করা সম্ভব। ব্লগারের ইনকাম হল Passive income যা আপনি ঘুমিয়ে থেকেও ইনকাম করতে পারবেন। 

 


অনলাইন ইনকামের উৎস :- অনলাইনে ইনকাম বিভিন্নভাবে হতে পারে তবে অনলাইনে ইনকামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো Youtube, Blogger, Facebook page, Quora. 


টাকা পাওয়ার মাধ্যম :- YouTube অথবা Blogger এর মাধ্যমে  টাকা উপার্জন করা হলেও এর একটা মাধ্যম রয়েছে যা হল Adsense Account. Adsense Account Approved হয়ে গেলে Adsense  এর মাধ্যমে সরাসরি Bank Account এ টাকা তোলা যায়। 


Adsense Account Approvel এর নিয়ম :- Adsense Account Approved করার জন্য আপনাকে ব্লগারে 15 থেকে 20 টা post লিখতে হবে এবং প্রত্যেকটি পোস্টে 1000 থেকে 1500 শব্দ থাকতে হবে।পোস্টগুলি Unique হতে হবে কমপক্ষে 80% কিংবা 100% Unique হলে খুব ভালো হয়। 1500 থেকে 2000 Traffic বা Visitors থাকতে হবে।


Payments কীভাবে পাওয়া যাবে? :- Adsense Account Approved হওয়ার পর 10💲ডলার ইনকাম হলে Google Adsense Team থেকে 6 Digit PIN পাঠানো হবে আপনার ঠিকানায়। সেই 6 Digit PIN Generation করার পর 100💲ডলার ইনকাম হয়ে গেলে সরাসরি Bank Account এ Rupee তে পরিনত হয়ে Account এ Payments মিলবে। 



Wednesday, September 14, 2022

হঠাৎ বন্যায় অসহায় সিলেট

হঠাৎ বন্যায় অসহায় সিলেট
                 লেখক - করিমুল ইসলাম

১১ই মে ২০২২ সালে আসাম ও অরুনাচল প্রদেশে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদী, কুশিয়ারা নদী ও অন্যান্য নদ - নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শহর সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়। 

বন্যার অবস্থান :- সিলেটের ৬ টি উপজেলা, সুনামগঞ্জের ৬ টি উপজেলা ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নেয়। 


বন্যার কারণ :- যেহেতু মেঘালয় বৃষ্টি বহুল অঞ্চল এবং ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢাল চলমান থাকে ফলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের সিলেটে। কয়েকদিন ধরে একটানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে সিলেটে। প্রবাহিত সুরমা নদী, সারি নদী, লুভা নদী, ধুলাই নদী, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। সিলেট সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত। যেহেতু এই নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়াতে ঠিকমতো পানি প্রবাহিত হচ্ছে না আর এই কারণেই সিলেটে বন্যা হয়।। 

ক্ষয়ক্ষতি :- সিলেট জেলায় কৃষিকাজের উপযুক্ত জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। ঘরবাড়ি ভেসে যায়, মানুষ, গরু - ছাগল চোখের পলকে ভেসে যায়, লাশের পর লাশ ভেসে যায়, কে সাহায্য করবে তাদের ? সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেই পানির নীচে, তাহলে কিভাবে উন্নয়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।।

বর্তমান অবস্থা :- চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। বর্তমানে ৫০ টাকার নৌকা ভাড়া ৫০০০ টাকা, ৫ টাকার মোমবাতি ১০০ টাকা। খাওয়ার রান্না করার মত জায়গা নেই। বাইরে থেকে সাহায্য করলেও কিভাবে এত জনের মুখে খাবার তুলে দিবে। কিভাবে সিলেটবাসী ত্রাণ পাবে ? 

এটা যেন একটা জলজ্যান্ত মৃত্যুর হাহাকার। 

" সিলেটে বর্ষাকালে ডুবছে জনবসতি,
গ্রীষ্মকালে পানি শুকিয়ে হয় মরা কাঙ্গী।"

সিলেটে বর্ষাকালে এত পরিমাণে বন্যা হয় যার ফলে জনবসতি ডুবছে। কিন্তু গ্রীষ্মকালে আবার পানি শুকিয়ে পরিণত হয় মরা কাঙ্গী, মাটি পর্যন্ত ফেটে যায়। সুরমা নদীতে হেঁটে পার হওয়া যায়।

নিয়ন্ত্রণ :- যদি সুরমা নদী ঠিকমতো খনন করা হত আর দুই পাশে বাঁধ দেওয়া হত তাহলে হয়তো বা এতটা ভয়াবহের সম্মুখীন হতে হত না সিলেটবাসীদের।


সমাপ্ত 

Sunday, September 4, 2022

Teacher's day speech in bengali

 

শিক্ষক দিবসের সেরা বক্তব্য

              লেখক - করিমুল ইসলাম

শিক্ষক দিবস নামটা শুনলেই আমার চোখের সামনে যার ছবি সবার আগে ভেসে ওঠে তিনি হলেন আমার মা। যার কোলে বসে আমি এই ধরণীকে চিনেছি। মায়ের কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর গোটা জীবনভর যাদের কাছ থেকে শিখেছি এবং শিখে চলেছি প্রত্যেককে আমার অন্তর থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। 



 " A Good Teacher is like a candle it consumes it self to light the way for other ". অর্থাৎ একজন ভালো শিক্ষক হল একটি মোমবাতির মতো যা অন্যের জন্য পথ আলোকিত করার জন্য নিজে নিজে গ্রাস করে।

 শিক্ষকের আসল পরিচয় তার ছাত্র-ছাত্রীরা ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সাফল্য ও কৃতিত্বের মাধ্যমে নিজের শিক্ষকের সুনাম বৃদ্ধি করে। প্রত্যেক মানুষের জন্মধাত্রী হলেন মা এবং জীবন দান করেন তাঁর শিক্ষক। শিক্ষক যে শুধুমাত্র পড়াশোনা ক্ষেত্রেই হতে হবে এমন তা নয়। যাদের কাছ থেকে আমরা শিখি তাঁরাই আমাদের শিক্ষক। মানব সন্তানকে শিক্ষিত করে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে বলেই শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষকরা তৈরি করেন ডাক্তার, শিক্ষক ,খেলোয়াড় ও ইঞ্জিনিয়ার তাই শিক্ষককে বলা হয় সমাজের মেরুদন্ড। বাবা মা যেমন শিশুকে জন্ম দান করে, লালন - পালন করে, তেমনি শিক্ষক তার সকল মেধা, শ্রম ও সাধনা দিয়ে তাকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। 
একজন শিক্ষক জীবনে চলার পথে পরামর্শ দিবেন, ব্যর্থতার পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। 

বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্যে একজন হলেন সক্রেটিস। তিনি না থাকলে একজন প্লেটো তৈরি হত না ; আবার প্লেটো না থাকলে একজন অ্যারিস্টটল তৈরি হতেন না ; অ্যারিস্টটল না থাকলে হয়তো একজন আলেকজান্ডার তৈরি হতেন না। কেননা সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন প্লেটো ; প্লেটো এর ছাত্র ছিলেন অ্যারিস্টটল আর অ্যারিস্টটলের ছাত্র ছিলেন আলেকজান্ডার। 

"A life of joy and happiness is possible only on the basis of knowledge and science". অর্থাৎ জ্ঞান ও বিজ্ঞানের ভিত্তিতেই আনন্দ ও সুখের জীবন সম্ভব। 

বিশ্বে শিক্ষক দিবস ৫ ই অক্টোবর হলেও ভারতবর্ষে ৫ ই সেপ্টেম্বর পালন করা হয়। আজকের এই দিনটিকে শিক্ষক দিবস রূপে বেছে নেওয়ার একটা তাৎপর্য আছে। এই দিনে আমাদের দেশে এক মহান ও আদর্শ শিক্ষক জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তার জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন - " জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয় তাহলে এটা আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয় হবে । " সেইখান থেকে অর্থাৎ ১৯৬২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। 

একজন আদর্শ শিক্ষক ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ । তিনি ৫ ই সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ সালে ঠিরুত্তানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭ ই এপ্রিল ১৯৭৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি স্বাধীন ভারতে প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ১৯৫২ -১৯৬২ সাল এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ১৯৬২ - ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ভারত সরকার ১৯৫৪ সালে তাকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান " ভারতরত্ন " দিয়ে সম্মানিত করে। 

একে ধারে তিনি ছিলেন রাজনীতিবিদ দার্শনিক ও অধ্যাপক  এবং ছাত্র জীবনে অতি মেধাবী। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয় ছিল 'বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্ব কল্পনা'। বিশ্বের কাছে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাকে ব্রিটিশ নাইটহুডে এর সম্মানিত করা হয়। 

প্রথম জীবনে তিনি মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপন করেন ১৯১৮ সালে। তার প্রথম গ্রন্থ - " The Philosophy of Rabindranath Tagore ".
 
তিনি বলেন - " আপনার প্রতিবেশীকে ভালবাসেন, কারণ আপনি নিজেই আপনার প্রতিবেশী। আপনার প্রতিবেশী অন্য কেউ এটা একটা ভ্রম।"
তাই আজকের এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রত্যেক শিক্ষকের প্রতি ৩৬৫ দিন ভালোবাসা ,স্নেহ অটুট থাকুক । এখানে আমার বক্তব্যকে ইতি করলাম। 

" The Best Teachers' teach from the HEART, 
Not from the Book. "
অর্থাৎ সেরা শিক্ষকরা মন থেকে শিক্ষা দেন, বই থেকে নয়। 

HAPPY TEACHERS' DAY

শুভ শিক্ষক দিবস




Sunday, August 21, 2022

AdSense Account Disabled for Invalid Traffic Activity Solve.

 

        AdSense Account Disabled for   

            Invalid Activity Solve. 




আপনার অ্যাকাউন্টে অবৈধ ট্রাফিক সনাক্ত করার জন্য অ্যাকাউন্টটিকে 30 দিনের জন্য সাময়িকভাবে Suspended করে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে আপনার সাইট গুলি, মোবাইল অ্যাপগুলি বা ইউটিউব চ্যানেলগুলি তে কোন বিজ্ঞাপন পরিবেশন করা হবে না। 


*** অ্যাকাউন্ট Suspended করার কারণ :-

Invalid activity multi clicking  অর্থাৎ ( অবৈধ কার্যকলাপ মাল্টি ক্লিকং ) আপনার বিজ্ঞাপন গুলিতে এক বা একাধিক ব্যবহারকারীর বারবার ক্লিক করার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়ার জন্য যা Google Adsense Team এর নীতি দ্বারা নিষিদ্ধ। 


*** অ্যাকাউন্ট (re - enabled) পুনরায় সক্রিয় করার উপায় :-

বিজ্ঞাপন দেখানো থেকে বিরত রাখতে অনুগ্রহ করে আপনার সাইটগুলি, মোবাইল অ্যাপগুলি বা ইউটিউব চ্যানেলগুলি থেকে বিজ্ঞাপন কোড সরিয়ে দিন। 


*** অ্যাকাউন্ট (re - enabled) পুনরায় সক্রিয় হওয়ার পর যা করা উচিৎ নয় :- 

1) যদি অবৈধ ট্রাফিক চলতে থাকে তাহলে ইকো সিস্টেমকে সুরক্ষিত করার জন্য আপনার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে অক্ষম করার মতো আরো পদক্ষেপ নিতে পারে। 

2) যদি অবৈধ ট্রাফিক চলতে থাকে তাহলে গত ৬০ দিনের আপনার মোট উপার্জন পর্যাপ্ত আটকে রাখতে পারে। 


*** Google বিজ্ঞাপনের নিয়ম :- 

1) Google বিজ্ঞাপনগুলিতে ক্লিক প্রকৃত ব্যবহারকারী আগ্রহের ফলে হতে হবে। 

2) প্রকাশকরা অন্যদের রিফ্রেশ করতে বা তাদের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতে পারবেনা। 

3) এর মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীদের আপনার সাইট গুলি, মোবাইল অ্যাপগুলি বা ইউটিউব চ্যানেল গুলিতে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করা যাবে না। 

4) বিজ্ঞাপন দেখা বা সার্চ করার জন্য ব্যবহারকারীদের পুরস্কার দেওয়া যাবে না এবং এই ধরনের আচরণের জন্য তৃতীয় পক্ষের জন্য অর্থ সংগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার থেকে বিরত থাকা। 

5) আপনার নিজের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করা এবং স্বয়ং ক্রিয়া ক্লিকং টুল বা ট্রাফিক উৎসর বা অন্যান্য প্রতারণামূলক সফটওয়্যার ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। 


*** অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য যা প্রয়োজন :-

অতিরিক্ত সেরা অনুশীলনের জন্য অনুগ্রহ করে Adsense প্রোগ্রাম নীতি, Google বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থাপক অংশীদার নির্দেশিকা এবং বিজ্ঞাপনের ট্রাফিক গুনমান সম্পদ কেন্দ্র যান। আপনি যদি আপনার সাইটগুলি, অ্যাপগুলি বা YouTube channel গুলিতে  প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন গুলি পরীক্ষা করতে চান তবে অনুগ্রহ করে Google Publisher toolbar ব্যবহার করুন। 

 AdSense Account Disabled for Invalid Traffic Activity Solve.


                                    ধন্যবাদ 


Sunday, July 10, 2022

বাংলা কবিতা

         

                       কবিতা - তুই এমন হবি? 

                                       কবি - গুলসাদ আলম







ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকেও, 

                                    কল্পনাতে ধরা দিবি? 

সারা রাতের নিঘুম চোখে , 

                                   ঘুম জড়ানো আবেগ হবি? 

থাকবরে তোর চেতন জুড়ে, 

                                    গল্প বলার ধরণ হবি? 

খুঁজতে গেলে মনের অতলে, 

                                    হয়তো প্রেমের মানিক পাবি। 

রন্ধ্রে রন্ধ্রে কাঁপন তুলে , 

                                   গন্ধতে তোর মাতাল হব । 

তোর হৃদয়েও লহর তুলে, 

                                  চোখের কোনের কাজল হব। 

শিল্পী মনের ক্যানভাসেতে, 

                                   রং তুলির ঐ আঁচড় হবি ? 

ইচ্ছে মতন হরেক রঙে, 

                                 পেলব শরীর রাঙিয়ে দিবি। 

হর বোলদের বোল ফোটাবি , 

                                সাঁঝের শাঁখ আর পিদিম হবি ? 

রাত প্রহরে জোনাক হয়ে , 

                                  আমার মনে রাত কাটাবী। 

আমার সকল প্রার্থনাদের, 

                                       তুইই শুধু কারণ হবি? 

 শেষে পাড়ি দেওয়ার কালে, 

                                     তুই কি হাজার বারন হবি? 


                           ( সম্পাদনায় - করিমুল ইসলাম ) 

                              


                             সমাপ্ত

Thursday, March 31, 2022

Covid-19 poem

 

করোনা ভাইরাস

                    করিমুল ইসলাম




সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে,              করোনা নামক ভাইরাসে, 

            এই বুঝি গেল প্রাণটা এক নিমেষে। 

কলেরা, ডেঙ্গু, কালাজ্বর,  তার থেকে অতি করোনা শক্তিধর, 

                নাখ, মুখ, ঢেকে রাখ মাস্কে ।। 


দাঙ্গা নয়, বিদ্বেষ নয়,            করোনার মোকাবিলায় করব জয়, 

           স্বাস্থ্যবিধি মেনে বারেবারে হাত ধোয়া চাই। 

জ্বর, সর্দি - কাশি হয়,   সমাধানটা ডাক্তারের কাছে রয়, 

          ডাক্তারের পরামর্শে মহামারি থেকে রক্ষা পাই।। 


স্কুল, কলেজ, দোকান সব বন্ধ,            বাতাসে বইছে আত্মঙ্কের গন্ধ, 

                  বিশ্ব জুড়ে কারফিউ হয়েছে জারি।

পুলিশ, সেনাবাহিনী, নার্স, ডাক্তার,    বিনামূল্যে পরিষেবা  দিচ্ছে সরকার, 

          যমের মতো প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে কত নর - নারী।। 


তুমি কয়েকটা দিন ধৈর্য্য ধরে কোয়ারেন্টাইনে থেকো,    কষ্ট হলেও নিজেকে ঘরে বন্দী করে রেখো, 

          কোভিশিল্ড অথবা কোভ্যাক্সিন টিকা করুন। 

ভয়ে ভয়ে কাটছে দিন - রাত,       করোনা ভাইরাস পেতেছে মরন ফাঁদ, 

                  নিজে সুস্থ থাকুন অপরকে সুস্থ রাখুন।।



    সমাপ্ত



Friday, March 25, 2022

স্বপ্নের একটা মেসেজ পৃথিবী নিস্তেজ

            স্বপ্নের একটা মেসেজ পৃথিবী নিস্তেজ

                           করিমুল ইসলাম





মোবাইলে একটা এসএমএস এলো। তাকিয়ে দেখি ৫ কোটি টাকার মেসেজ। আমার মন আনন্দে ভরে গেল। ঘর থেকে বাইরে বের হলাম আর চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে বলছি ---  সবাই শোনো, দিন বদলে গেছে আমার অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি টাকা এসেছে। ঘর থেকে মা বেরিয়ে এসে বললেন --- এত আনন্দের কী আছে? আমার অ্যাকাউন্টেও ৫ কোটি টাকার মেসেজ দিয়েছে। এই যে দেখ মেসেজ, আমি একটু অবাক হলাম! ভাবলাম পাড়ার সবাইকে গিয়ে বলি। অথচ পাড়ার লোকেরাও আমাকে বলছে - বেশি উত্তেজিত হওয়ায় কী আছে? আমাদের অ্যাকাউন্টেও ৫ কোটি টাকা জমা হয়েছে। হঠাৎ যেন আমার আনন্দটা উবে গেল। 

     তবুও ভাবলাম  যাই, বাজারে গিয়ে কিছু মিষ্টি নিয়ে আসি। বাজারে গিয়ে দেখালাম সব দোকান বন্ধ। একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম - ও দাদা এই মিষ্টির দোকান বন্ধ কেন ? সে বলল --- মিষ্টির দোকানদারের আর দোকানদারি করার কি দরকার।তার অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি টাকা এসেছে। ভাবলাম একটু মার্কেটে যাই।সেখান থেকে কিছু নিয়ে আসি কিন্তু এ কি! সেখানেও কোন দোকান খোলা নেই। প্রচন্ড খিদে পেয়েছে। ভাবলাম এখানে তো দোকান বন্ধ। সামনের দিকে যাই, ভালো কোনো হোটেল পেলে তৃপ্তিভরে খাওয়া যাবে। কিন্তু সামনে যতোই যাই দেখি সবই ফাঁকা হোটেলের বাইরে থাকা স্বাগতম জানানোর সেই লোক ও নেই। শপিং মলের সিকিউরিটি গার্ড ও নেই। 

     সবজি ওয়ালা , চা ওয়ালা কেউই নেই। সব কিছুই বন্ধ। সবার অ্যাকাউন্টে নাকি  ৫ কোটি টাকা এসেছে। ৫ কোটি টাকা তোলার জন্য এখন সকলের গন্তব্য কেবলমাত্র ব্যাংকের দিকে।এখন কারোই কাজ করার প্রয়োজন নেই। কারণ সবার কাছেই এখন ৫ কোটি টাকা রয়েছে। এর মধ্যেই আমার এক বন্ধু ফোন করে বলল - আমি আমার জবটা ছেড়ে দিয়েছি। কারণ আমার কাছে এখন ৫ কোটি টাকা আছে। আমার আর এক বন্ধু টিউশন পড়ানো বন্ধ করে দিয়েছে। ইফাত আর চাকরির খোঁজা করে না। শ্রমিকরা আর কলকারখানায় যায় না। সব বন্ধ সবাই এখন বড় লোক। বিকেলে মাঠের দিকে গেলাম সেখানেও ফাঁকা সবাই কাজ ফেলে বাড়ি চলে গেছে ।এখন আর তাদের রোদে জ্বলে পুঁড়ে কাজ করতে হবে না। 

     এমন কি হাসপাতালে ডাক্তাররা বসে আড্ডা দিচ্ছে। তারাও আর চিকিৎসা করবে না। কারণ সাড়া জীবনের জন্য ৫ কোটি টাকাই যথেষ্ট। এক সপ্তাহ পরে দেখা গেল খিদের জ্বালায় লোক কাঁদছে। কারণ জমি থেকে কেউ ফসল তুলছে না। সমস্ত দোকান বন্ধ, হোটেল, মেডিক্যাল সব বন্ধ। অসুস্থ হয়ে মানুষ মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অন্য দিকে পশু - পাখিরা না খেয়ে মরছে। জমিতে সবুজ ঘাস নেই, সোনালী ফসল নেই। শিশুরাও খিদের জ্বালায় কাঁদছে। কারণ গোয়ালা আর দুধ দিচ্ছে না। লোকজন রাস্তায় রাস্তায় পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে ঘুরছে। কাঁদছে আর বলছে ---

 ---  ' এই নাও ভাই ' ১০ লাখ টাকা দিলাম, আমাকে ১০০ গ্রাম দুধ দাও। ১০ দিন বাদে না খেয়ে আরও মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু কিছু লোক টাকার ব্যাগ নিয়ে ঘুরছে রাস্তায় রাস্তায় আর বলছে ---

 ---  ' এই নাও ভাই ৫০ লাখ টাকা আমাকে ১০ কেজি চাল দাও ' । 

চারিদিকে কেবল মৃত্যুর ছবি। নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে আমিও ৫ কোটি টাকা নিয়ে ক্রমাগত ছুটে চলেছি। আর বলছি ---

                      " নাও ভাই পুরো ৫ কোটি টাকা নিয়ে নাও, 

                        তবুও আমাকে কিছু খাবার দাও "। 

কে কার টাকা নিবে ? সবার কাছেই তো ব্যাগ ভর্তি টাকা রয়েছে। কিন্তু কারো কাছেই খাবার নেই। মানুষ মানুষের দিকে অগ্রসর হচ্ছে হিংস্র পশুর ন্যায় তেড়ে আসছে। এই বুঝি মানুষ মানুষকে খাবে। অচেনা একজন লোক আমাকে তাড়া করছে। আমি রকেটের ন্যায় ছুটছি। ক্ষুধার্ত মানুষ কতটা আর ছুটতে পারি? হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলাম। মা মা বলে চিৎকার করে উঠলাম। তখনই পাশের রুম থেকে মা ছুটে এসে বলল ---

 --- কী রে ! কী হলো? সকাল হয়ে গেছে ঘুম থেকে ওঠ। 

বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিস কী জন্য, কোন খারাপ স্বপ্ন দেখছিলি বুঝি? এতক্ষণ স্বপ্ন ছিল। সেটা বুঝতে পেরে আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম --- না মা খারাপ নয়, ভালো স্বপ্ন। সবার হাতে অনেক টাকা থাকার চেয়ে, আমাদের এই অভাবের দিনগুলো অনেক ভালো। প্রত্যেকটি দিন আমাদের আনন্দময়। আমরা গরীব হতে পারি, কিন্তু আমাদের ঘর আছে, ঘরে দু - মুঠো ভাত আছে। খাবারের সাথে জল আছে, উঠানে শিশুরা খেলছে, মাঠে গরু ঘাস খাচ্ছে, দোকান বাজারে মানুষজনের ভিড়, রাস্তায় গাড়ি চলছে, চারিদিকে পরিবেশটি আনন্দে ভরপুর করে রেখেছে। স্রষ্টার কি অপরূপ সৃষ্টি যে যতটুকু যোগ্য তাকে ততটুকু দিয়ে রেখেছেন। 






Featured Post

কবিতা শিশুর দুই জীবন children day poem

  কবিতা - শিশুর দুই জীবন কবি - করিমুল ইসলাম আমি শিশু                    আমার মন অলিখিত সাদা কাগজের মতো,  আমি বাবা - মায়ের                  ...

Popular