TAJBAJ Bangla Blog: Speech
Showing posts with label Speech. Show all posts
Showing posts with label Speech. Show all posts

Sunday, October 2, 2022

গান্ধী জয়ন্তী বক্তৃতা

 

গান্ধী জয়ন্তী বক্তৃতা

 লেখক - করিমুল ইসলাম

উপস্থিত সম্মানিত অধ্যক্ষ শিক্ষক এবং প্রিয় সহপাঠী ও শ্রোতামন্ডলী আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আজ ২ রা অক্টোবর আমরা সকলে গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছি।


মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ২ রা অক্টোবর ১৮৬৯ সালে গুজরাটে পর্বন্দরে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা করমচাঁদ উত্তমচাঁদ গান্ধী এবং মাতা পুতলিবাই গান্ধী। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতে এবং বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা অর্থাৎ মহান আত্মা এবং বাপু অর্থাৎ বাবা নামে পরিচিত ছিলেন। ভারত সরকার সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ২ রা অক্টোবর তার জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদার সহিত পালিত হয়। ২০০৭ সালে ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ রা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

 

তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিত ব্রিটিশ আইনজীবী। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গান্ধী প্রথম তার অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন। ভারতে ফিরে আসার পরে তিনি কয়েকজন কৃষক ও দিন মজুরকে সাথে নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বলেন --

 “ শক্তি দেহের ক্ষমতা থেকে আসে না ; শক্তি আসে অদম্য ইচ্ছা থেকে ”

১৯২০ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গান্ধী একাধিক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে সত্যাগ্রহ আন্দোলন বলা হয়। ভারত জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে আসার পর গান্ধী সমগ্র ভারতব্যাপী দরিদ্র দূরীকরণ, নারী স্বাধীনতা, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, বর্ণ বৈষম্য দূরীকরণ প্রচার শুরু করেন। কিন্তু এর সবগুলোই ছিল স্বরাজ অর্থাৎ ভারতকে বিদেশি শাসন থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য। বিহারের চম্পারণে চাষীদের উচ্চ মাত্রায় কর দিতে বাধ্য করা হতো এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিশেষ করে নীল চাষ এবং তুলা চাষ করতে বাধ্য করা হতো। 

১৯১৭ সালে গান্ধী ইংরেজদের এই পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন। মহাত্মা গান্ধীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি ছিল অসহযোগ আন্দোলন । তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গেলে তাকে কারাগারে বন্দী করা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন ---

 “তোমরা আমাকে শেকল দিয়ে বাধতে পারো, তোমরা আমাকে অত্যাচার করতে পারো, এমনকি তোমরা আমার এই শরীরটাকে ছিন্নভিন্ন করতে পারো কিন্তু তোমরা কখনোই আমার মস্তিষ্ক বন্দি করতে পারবে না।”


তিনি সাধারণ জীবন যাপন করতেন । তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধুতি এবং সাল যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে আপনি কেন এইরকম সাধারণ পোশাক পরিধান করেন তিনি বলেন ---

যেখানে আমার দেশের জনসাধারণের পোশাক নেই সেখানে আমি কি করে দামি পোশাক পরিধান করব। 

গান্ধী জানতেন ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে হিন্দু মুসলিম একতা কতটা প্রয়োজন তাই তিনি খিলাফত আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন। খিলাফত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধী মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থন করলেও অনেক হিন্দুত্ববাদী নেতা তাতে সন্তুষ্ট হননি। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখা ।

১৯৪২ সালে গান্ধী শুরু করেন ভারত ছাড়ো আন্দোলন । ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার দাবি জানান মহাত্মা গান্ধী।তার Do Or die  কারেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে, ধ্বনিতে মুখরিত হলো ভারতের আকাশ বাতাস। 

১৯৪৮ সালের ৩০ শে জানুয়ারি গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করা হয় । সে সময় তিনি নতুন দিল্লির বিরলা ভবনে মাঝরাত্রি কালীন পথসভা করছিলেন । তার হত্যাকারী ছিলেন নাথুরাম গডসে। 

তিনি বিশ্বাস করতেন ---

  “কোন কিছুতে বিশ্বাস করে সেই মোতাবেক জীবন যাপন না করাটা অসততা ”

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু গান্ধীজি জানতেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করাটা বেশি কঠিন আর তাই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির উপর। 

আসুন আজ এই বিশেষ দিনে আমরা সকলে শপথ গ্রহণ করি, সকলে এক হয়ে আরো সুন্দর ও সুস্থ ভারত গড়ে তুলি।




Sunday, September 4, 2022

Teacher's day speech in bengali

 

শিক্ষক দিবসের সেরা বক্তব্য

              লেখক - করিমুল ইসলাম

শিক্ষক দিবস নামটা শুনলেই আমার চোখের সামনে যার ছবি সবার আগে ভেসে ওঠে তিনি হলেন আমার মা। যার কোলে বসে আমি এই ধরণীকে চিনেছি। মায়ের কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর গোটা জীবনভর যাদের কাছ থেকে শিখেছি এবং শিখে চলেছি প্রত্যেককে আমার অন্তর থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। 



 " A Good Teacher is like a candle it consumes it self to light the way for other ". অর্থাৎ একজন ভালো শিক্ষক হল একটি মোমবাতির মতো যা অন্যের জন্য পথ আলোকিত করার জন্য নিজে নিজে গ্রাস করে।

 শিক্ষকের আসল পরিচয় তার ছাত্র-ছাত্রীরা ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সাফল্য ও কৃতিত্বের মাধ্যমে নিজের শিক্ষকের সুনাম বৃদ্ধি করে। প্রত্যেক মানুষের জন্মধাত্রী হলেন মা এবং জীবন দান করেন তাঁর শিক্ষক। শিক্ষক যে শুধুমাত্র পড়াশোনা ক্ষেত্রেই হতে হবে এমন তা নয়। যাদের কাছ থেকে আমরা শিখি তাঁরাই আমাদের শিক্ষক। মানব সন্তানকে শিক্ষিত করে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে বলেই শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষকরা তৈরি করেন ডাক্তার, শিক্ষক ,খেলোয়াড় ও ইঞ্জিনিয়ার তাই শিক্ষককে বলা হয় সমাজের মেরুদন্ড। বাবা মা যেমন শিশুকে জন্ম দান করে, লালন - পালন করে, তেমনি শিক্ষক তার সকল মেধা, শ্রম ও সাধনা দিয়ে তাকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। 
একজন শিক্ষক জীবনে চলার পথে পরামর্শ দিবেন, ব্যর্থতার পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। 

বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্যে একজন হলেন সক্রেটিস। তিনি না থাকলে একজন প্লেটো তৈরি হত না ; আবার প্লেটো না থাকলে একজন অ্যারিস্টটল তৈরি হতেন না ; অ্যারিস্টটল না থাকলে হয়তো একজন আলেকজান্ডার তৈরি হতেন না। কেননা সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন প্লেটো ; প্লেটো এর ছাত্র ছিলেন অ্যারিস্টটল আর অ্যারিস্টটলের ছাত্র ছিলেন আলেকজান্ডার। 

"A life of joy and happiness is possible only on the basis of knowledge and science". অর্থাৎ জ্ঞান ও বিজ্ঞানের ভিত্তিতেই আনন্দ ও সুখের জীবন সম্ভব। 

বিশ্বে শিক্ষক দিবস ৫ ই অক্টোবর হলেও ভারতবর্ষে ৫ ই সেপ্টেম্বর পালন করা হয়। আজকের এই দিনটিকে শিক্ষক দিবস রূপে বেছে নেওয়ার একটা তাৎপর্য আছে। এই দিনে আমাদের দেশে এক মহান ও আদর্শ শিক্ষক জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তার জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন - " জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয় তাহলে এটা আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয় হবে । " সেইখান থেকে অর্থাৎ ১৯৬২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। 

একজন আদর্শ শিক্ষক ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ । তিনি ৫ ই সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ সালে ঠিরুত্তানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭ ই এপ্রিল ১৯৭৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি স্বাধীন ভারতে প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ১৯৫২ -১৯৬২ সাল এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ১৯৬২ - ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ভারত সরকার ১৯৫৪ সালে তাকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান " ভারতরত্ন " দিয়ে সম্মানিত করে। 

একে ধারে তিনি ছিলেন রাজনীতিবিদ দার্শনিক ও অধ্যাপক  এবং ছাত্র জীবনে অতি মেধাবী। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয় ছিল 'বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্ব কল্পনা'। বিশ্বের কাছে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাকে ব্রিটিশ নাইটহুডে এর সম্মানিত করা হয়। 

প্রথম জীবনে তিনি মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপন করেন ১৯১৮ সালে। তার প্রথম গ্রন্থ - " The Philosophy of Rabindranath Tagore ".
 
তিনি বলেন - " আপনার প্রতিবেশীকে ভালবাসেন, কারণ আপনি নিজেই আপনার প্রতিবেশী। আপনার প্রতিবেশী অন্য কেউ এটা একটা ভ্রম।"
তাই আজকের এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রত্যেক শিক্ষকের প্রতি ৩৬৫ দিন ভালোবাসা ,স্নেহ অটুট থাকুক । এখানে আমার বক্তব্যকে ইতি করলাম। 

" The Best Teachers' teach from the HEART, 
Not from the Book. "
অর্থাৎ সেরা শিক্ষকরা মন থেকে শিক্ষা দেন, বই থেকে নয়। 

HAPPY TEACHERS' DAY

শুভ শিক্ষক দিবস




Featured Post

কবিতা শিশুর দুই জীবন children day poem

  কবিতা - শিশুর দুই জীবন কবি - করিমুল ইসলাম আমি শিশু                    আমার মন অলিখিত সাদা কাগজের মতো,  আমি বাবা - মায়ের                  ...

Popular