bangla kobita website.bangla kobita book.bengali story. short story.Tajbaj Bangla Blog. Karimul Islam.#tajbaj,#poems,#stories,#story.karimulislamerpoemsandstories.blogspot.com.Get your Bangla blog listed at Bangla blogs, a directory of Bengali blogs from all over Kobita lyrics Bangla kobita abritti.@Tajbaj
উপস্থিত সম্মানিত অধ্যক্ষ শিক্ষক এবং প্রিয় সহপাঠী ও শ্রোতামন্ডলী আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আজ ২ রা অক্টোবর আমরা সকলে গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছি।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ২ রা অক্টোবর ১৮৬৯ সালে গুজরাটে পর্বন্দরে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা করমচাঁদ উত্তমচাঁদ গান্ধী এবং মাতা পুতলিবাই গান্ধী। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতে এবং বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা অর্থাৎ মহান আত্মা এবং বাপু অর্থাৎ বাবা নামে পরিচিত ছিলেন। ভারত সরকার সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ২ রা অক্টোবর তার জন্মদিন ভারতে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদার সহিত পালিত হয়। ২০০৭ সালে ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ রা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিত ব্রিটিশ আইনজীবী। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিপীড়িত ভারতীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গান্ধী প্রথম তার অহিংস শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলনের মতাদর্শ প্রয়োগ করেন। ভারতে ফিরে আসার পরে তিনি কয়েকজন কৃষক ও দিন মজুরকে সাথে নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বলেন --
“ শক্তি দেহের ক্ষমতা থেকে আসে না ; শক্তি আসে অদম্য ইচ্ছা থেকে ”
১৯২০ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গান্ধী একাধিক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে সত্যাগ্রহ আন্দোলন বলা হয়। ভারত জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে আসার পর গান্ধী সমগ্র ভারতব্যাপী দরিদ্র দূরীকরণ, নারী স্বাধীনতা, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, বর্ণ বৈষম্য দূরীকরণ প্রচার শুরু করেন। কিন্তু এর সবগুলোই ছিল স্বরাজ অর্থাৎ ভারতকে বিদেশি শাসন থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য। বিহারের চম্পারণে চাষীদের উচ্চ মাত্রায় কর দিতে বাধ্য করা হতো এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিশেষ করে নীল চাষ এবং তুলা চাষ করতে বাধ্য করা হতো।
১৯১৭ সালে গান্ধী ইংরেজদের এই পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন। মহাত্মা গান্ধীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি ছিল অসহযোগ আন্দোলন । তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গেলে তাকে কারাগারে বন্দী করা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন ---
“তোমরা আমাকে শেকল দিয়ে বাধতে পারো, তোমরা আমাকে অত্যাচার করতে পারো, এমনকি তোমরা আমার এই শরীরটাকে ছিন্নভিন্ন করতে পারো কিন্তু তোমরা কখনোই আমার মস্তিষ্ক বন্দি করতে পারবে না।”
তিনি সাধারণ জীবন যাপন করতেন । তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধুতি এবং সাল যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে আপনি কেন এইরকম সাধারণ পোশাক পরিধান করেন তিনি বলেন ---
যেখানে আমার দেশের জনসাধারণের পোশাক নেই সেখানে আমি কি করে দামি পোশাক পরিধান করব।
গান্ধী জানতেন ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে হিন্দু মুসলিম একতা কতটা প্রয়োজন তাই তিনি খিলাফত আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন। খিলাফত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধী মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থন করলেও অনেক হিন্দুত্ববাদী নেতা তাতে সন্তুষ্ট হননি। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখা ।
১৯৪২ সালে গান্ধী শুরু করেন ভারত ছাড়ো আন্দোলন । ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার দাবি জানান মহাত্মা গান্ধী।তার Do Or die কারেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে, ধ্বনিতে মুখরিত হলো ভারতের আকাশ বাতাস।
১৯৪৮ সালের ৩০ শে জানুয়ারি গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করা হয় । সে সময় তিনি নতুন দিল্লির বিরলা ভবনে মাঝরাত্রি কালীন পথসভা করছিলেন । তার হত্যাকারী ছিলেন নাথুরাম গডসে।
তিনি বিশ্বাস করতেন ---
“কোন কিছুতে বিশ্বাস করে সেই মোতাবেক জীবন যাপন না করাটা অসততা ”
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু গান্ধীজি জানতেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করাটা বেশি কঠিন আর তাই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির উপর।
আসুন আজ এই বিশেষ দিনে আমরা সকলে শপথ গ্রহণ করি, সকলে এক হয়ে আরো সুন্দর ও সুস্থ ভারত গড়ে তুলি।