TAJBAJ Bangla Blog: December 2021

Wednesday, December 8, 2021

Covid- 19 stories


কোভিড - ১৯
                    
                        করিমুল ইসলাম






বেশ কয়েক দিন কেটে গেল। গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছে মুশারফ হুসেন সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান। কিছু দিন কাজ করে তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। হঠাৎ বিশ্ব জুড়ে লকডাউন। 
     
        পরের দিন সকালে মুশারফ হুসেন কাজের সন্ধানে বের হয় কিন্তু কোনো কাজ পেল না। পাবেই বা কি করে চারিদিকে তো চলছে লকডাউন ? বন্ধ হয়ে গেছে কল - কারখানা, দোকান। চলছে জনতা কারফিউ। বন্ধ হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সে কোনো কাজ না পাওয়ায় খালি হাতে বাড়িতে ফিরে আসে।
তাঁর স্ত্রী জিজ্ঞাসা করে ---
  --- কী গো খালি হাতে ফিরলে যে ? 
সে উত্তরে বলল ---
  ' বিশ্ব জুড়ে চলছে লকডাউন ' তাই কোন কাজ পেলাম না। 
সেই দিন তাদের অনাহারে কেটে গেল।

        আবার যখন সে কাজের সন্ধানে বের হল। সেই দিনও কোনো কাজ না পাওয়ায় ভীষণ চিন্তিত হয়। সামনে এক লঙ্গরখানা দেখতে পায়। সেখানে এত লোকের ভির। সে ভিরের মধ্যে অসুস্থবোধ করল। লঙ্গরখানার সামনে যেতেই সব ফুরিয়ে শেষ। শেষমেশ  শূন্য হস্তে ফিরে এলেন। আসার পথে একটি রেশন দোকান দেখতে পেলেন। 
সে দোকানদারকে বলল ---
 --- দাদা আমাকে একটুখানি রেশন দেন। আমার দুই সন্তান অনাহারে আছে। কিন্তু কে বা তার কথা শুনে? 
রেশন দোকানদার বলল ---
রেশন কার্ড আছে? 
সে বলল --- 
না। 
 রেশন দোকানদার বলল ---
 --- কার্ড নেই তো রেশন নেই।

      হঠাৎ তার ছোট ছেলে হামিদের ক্ষুধা আর স্যহ হল না। 
এক সরকারি হাসপাতালে তাঁর ঔষধ নিতে গেলে। সেখানে দেখতে পাওয়া যায় '' মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ এবং দুরত্ব বজায় রাখুন ''। কিন্তু তার কাছে মাস্ক না থাকায় পাশে থাকা ব্যক্তি তাকে মাস্ক দিয়ে সাহায্য করে। সেই মাস্ক নিয়ে ঔষধ নিল। সে মাস্কটিকে  সূক্ষ্ম নজরে দেখল আর মনে মনে ভাবতে লাগল।
এই রকম মাস্ক তৈরি করে বাজারে বিক্রি করলে বেশ রোজকার হবে। আমাদের সংসার নিঃসন্দেহে চলবে। সে বাড়িতে এসে দেখে সবাই নিস্তেজ হয়ে আছে। হামিদের মা মনে করে। 
" সুখের বন্ধু সবাই রে ভাই, 
  দুখের বন্ধু কেউ নাই "। 

সে হামিদের মাকে বলল ---
--- আর আমাদের চিন্তা করতে হবে না। এই যে আমি একটা মাস্ক এনেছি। এই রকম মাস্ক তৈরি করে বাজারে বিক্রি করলে আর আমাদের অভাব নেই। 
হামিদের মা মাস্ক টা দেখে বলল ---
--- সত্যি তো এবার একটা রোজকার করার উপায় পেয়ে গেলাম। আমাদের আর দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
  
      তারপর থেকে তাঁর স্ত্রীর বাড়িতে মাস্ক তৈরি করতে লাগল এবং সে বাজারে সেই মাস্ক বিক্রি করতে লাগল। যেহেতু বাজরে মাস্ক এর চাহিদা অনেক, সেই কারণে তার মাস্ক সহজেই বিক্রি হত। এই মাস্ক গুলো বাজারে চাহিদা পূরণ করত, সমাজের উপকার হত, লোকজন ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেত। 
    
    এই সমস্ত কিছু অভাব, কষ্ট, জনতা কারফিউ, লকডাউন হচ্ছে  " COVID - 19  অর্থাৎ করোনা ভাইরাস " এর কারণে। একটি ভাইরাস সাড়া বিশ্বটাকে একেবারে থমকে দিয়েছে। শুধু ভারতে নয় পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশে কমবেশি আক্রমণ করেছে। যদিও ভাইরাসটি প্রথম চীন দেশে দেখা দেয়। এই ভাইরাসটি একবার যাকে আক্রমণ করবে তার বাঁচার উপায় নেই। একজনের আক্রান্ত দেখা দিলে তাকে ১৪ দিন  " Quarantine " এ রাখা হয়। 

    " Covid -19 " এর হাত থেকে বাঁচতে চাইলে নিজেকে সচেতন রাখতে হবে, নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, মাস্ক লাগাতে হবে, ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না।





Featured Post

কবিতা শিশুর দুই জীবন children day poem

  কবিতা - শিশুর দুই জীবন কবি - করিমুল ইসলাম আমি শিশু                    আমার মন অলিখিত সাদা কাগজের মতো,  আমি বাবা - মায়ের                  ...

Popular